Sangeet Shastra/Sangeet Byakaran
ওঙ্কারনাথ ঠাকুর
ওঙ্কারনাথের জন্ম হয় বরোদার জহাজ গ্রামে,১৮৯৭ সালের ২৪ জুন।তাঁর পিতা পন্ডিত শ্রী গৌরীশঙ্কর ঠাকুর ছিলেন ব্রাহ্মণ।তিনি "ওঁ" মন্ত্রের উপাসনা করতেন বলে পুত্রের নাম ওঙ্কারনাথ রাখেন।তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে পুত্রসন্তান ই জন্মাবে।৪ বছর বয়স অবধি ঐ গ্রামে বাস করে পিতার সঙ্গে নর্মদা নদীর তীরে থাকা শুরু করেন। চতুর্থ শ্রেণী অবধি পড়াশোনা করার পরই পরিবারের জন্য ওঙ্কারনাথকে উপার্জনের চেষ্টা করতে হয়। তিনি পাচক ও কারখানায় মজুর হিসাবে কাজ শুরু করেন। কারখানার মালিক তাঁকে দত্তক নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন ও তার বদলে অর্থ দানের প্রস্তাব করেন। কিন্তু পিতা অসম্মত হন।ওঙ্কারনাথের সুমিষ্ট গলার আওয়াজ ছিল।১৪ বছর বয়সে তাঁর পিতার মৃত্যু হয়। মৃত্যুদিন তিনি আগে ঘোষণা করেছিলেন। পরবর্তীতে ভরোচ শহরের এক উদার পার্শী দাতা শেঠ শাহপুর জী মংচের জীবন ডুংগা ওঙ্কারনাথের গান শোনার জন্য তাঁকে আমন্ত্রণ জানান। গান শুনে মোহিত হয়ে বোম্বেতে সঙ্গীতজ্ঞ বিষ্ণুদিগম্বরের গান্ধর্ব মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেন।৫ বছরের পাঠ্যক্রম ৩ বছরে সমাপ্ত করেন।তাঁর দাদা চেষ্টা করেছিলেন মহাবিদ্যালয় থেকে তাঁকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসতে।কিন্তু তা সম্ভব হয়নি ওঙ্কারনাথের প্রার্থনায় ও অধ্যক্ষের কৌশলে।
শিক্ষা সমাপ্তির পর তিনি লাহোর গান্ধর্ব মহাবিদ্যালয়ে অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। সে সময় বিভিন্ন সংস্থা দ্বারা আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন।তাঁর চেষ্টায় পঞ্জাবের অভিজাত পর্দানশীন মহিলাদের মধ্যে সঙ্গীত শিক্ষার প্রসার ঘটে।
তাঁর গলার আওয়াজের কাছে বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজ ম্লান মনে হত।নিজের গায়ন ভঙ্গিমার সঙ্গে পাশ্চাত্য গায়নশৈলীর মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তিনি মূলত খেয়াল গায়ক ছিলেন।ধ্রুপদ, ধামার, টপ্পা ও গাইতেন।একটি রাগকে বিভিন্ন পদ্ধতিতে পরিবেশন করে দেড় ঘণ্টা গাইতেন। পন্ডিত মদনমোহন মালব্য তাঁকে "সঙ্গীত প্রভাকর" উপাধি দেন। বেনিটো মুসোলিনী রোমের "রয়াল অ্যাকাডেমী অফ মিউজিক "-র অধ্যক্ষকে আদেশ দেন যে যেন ওঙ্কারনাথের গানের স্বরলিপি লেখা হয়।
তিনি বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ছিলেন। হিন্দীতে "প্রণব ভারতী" ও "সঙ্গীতাঞ্জলী" এবং গুজরাটীতে "রাগ অনে রস" গ্রন্থগুলি রচনা করেন। ১৯৩৩ সালে ইটালীর ফ্লোরেন্সে আন্তর্জাতিক সঙ্গীত সম্মেলনে যোগ দেন। রাশিয়া থেকেও আমন্ত্রণ পান,তবে সেখানে যেতে পারেননি কারণ তাঁর স্ত্রী ইন্দিরা দেবীর মৃত্যু হয়। ১৯৫৫ সালে ভারত সরকার তাঁকে "পদ্মশ্রী " খেতাব দেন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন