Sangeet Byakaran
তাল-ছন্দবদ্ধ কিছু মাত্রা সমষ্টি হল তাল।শিবের তাণ্ডব নৃত্যের প্রথম অক্ষর 'ত' এবং দূর্গার লাস্য নৃত্যের প্রথম অক্ষর 'ল' নিয়ে তাল শব্দটি তৈরি হয়েছে। সঙ্গীতকে সুন্দরভাবে ছন্দবদ্ধ করে মুগ্ধতা আনার জন্যই তালের সৃষ্টি।তাল দুরকম:সমপদী ও বিষমপদী।
সমান মাত্রায় বিভক্ত তাল সমপদী,যথা-দাদরা,একতাল।
অসমান মাত্রাবিশিষ্ট তাল হল বিষমপদী, যথা-তেওড়া,ঝাঁপতাল।
মাত্রা-সঙ্গীত বা তালের লয় মাপার একক হল মাত্রা। কয়েকটি মাত্রা সমষ্টিই তাল।সব তাল সম্ থেকে বা প্রথম মাত্রা থেকে শুরু হয়না।সম্ শব্দের অর্থ হল সঙ্গীতে তালের প্রথম উৎপত্তিস্থল অথবা তালের সমাপ্তি, যা বেশি জোরে বাজান হয়।তালের প্রথম মাত্রা সম্।সব তাল বাজানোর সময় সম্ থেকে শুরু করে সম্ এ এসে শেষ হয়।একে এক আবর্তন বলে।
লয়-সঙ্গীতের গতির যা সমতা রক্ষা করে, তাই লয়। লয় তিনপ্রকার:বিলম্বিত, মধ্য ও দ্রুত লয়।
বিলম্বিত লয়ে মাত্রা বা সময় দীর্ঘ করে বাজান হয়।
বিলম্বিত লয়ের দ্বিগুণকে মধ্যলয় বলে।
মধ্য লয়ের দ্বিগুণকে দ্রুত লয় বলে।
তালের দুই মাত্রাকে এক মাত্রার মধ্যে গাওয়া বা বাজান হলে,তাকে দ্বিগুণ লয় বলে।একভাবে তিনগুণ, চৌগুণ বাজান হয়।
ঠেকা-তবলার ভাষাকে ঠেকা বলে।যেসব বর্ণের দ্বারা তালের মাত্রা, সম্,ফাঁক বোঝানো হয়।
তালে,যেখানে সংখ্যা থাকে,সেগুলোকে তালি বোঝানো হয়। আর যেখানে শূন্য থাকে,সেগুলোকে খালি বোঝানো হয়।
প্রতি তালের মাত্রাকে কয়েকটি বিভাগে ভাগ করা হয়। যথা-কাহারবা তালের দুটি বিভাগ।
উত্তর ও দক্ষিণ ভারতীয় তালের পার্থক্য:
হিন্দুস্তানীতে বিভাগকে,কর্ণাটকীতে অঙ্গ বলে।
হিন্দুস্তানীতে তাল,ফাঁক উভয়ই হয়, কর্ণাটকীতে তালি হয়।
হিন্দুস্তানীতে তাল তবলা,পাখোয়াজে বাজে,কর্ণাটকীতে মৃদঙ্গে বাজান হয়।
কর্ণাটকীতে ফাঁককে বিসর্জিতম বলে।হিন্দুস্তানীতে ফাঁক নির্দিষ্ট বিভাগের প্রথম মাত্রায় দেওয়া হয়, কর্ণাটকীতে ২য় মাত্রায় দেওয়া হয়।
উভয় পদ্ধতির তালের বাদনশৈলী পৃথক।
সাদৃশ্য হল উভয় পদ্ধতির তাল সম্ থেকে শুরু হয়।
কর্ণাটকীতে প্রধান সাতটি তাল-ধ্রুবতাল,মঠতাল,ত্রিপুুটতাল,অঠতাল,একতাল,রূপক তাল,ঝম্পকতাল।
রবীন্দ্রসৃষ্ট তালে কর্ণাটকী তালের মিল পাওয়া যায়। রবীন্দ্রসৃষ্ট অর্ধঝাঁপের সঙ্গে কর্ণাটকী তাল রূপকম,রূপকড়ার সঙ্গে মতন তাল,নবতালের সঙ্গে ত্রিপুুটতাল,নবপঞ্চতালের সঙ্গে সিংহ তালের মিল আছে।
মন্তব্য
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন