পোস্টগুলি

Sangeet Shastra/Sangeet Byakaran

বায়ুপুরাণের ৮৬-৮৭ অধ্যায়ে সঙ্গীতের স্থান,বর্ণ,অলঙ্কার, মন্দ্র,মধ্য,তার অনুযায়ী স্বর ও কালের উল্লিখিত আছে।   মার্কন্ডেয় পুরাণের ২৩ অধ্যায়ে সাত স্বর, গ্রাম,মূর্চ্ছনা,ঊনপঞ্চাশটি তান,লয় ইত্যাদির উল্লিখিত আছে। বৃহদ্দেশী গ্রন্থে প্রথম 'রাগ' শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়। এতে গ্রাম ও মূর্চ্ছনার বিস্তৃত আলোচনা  আছে।এটি দেশী রাগের সঙ্কলন গ্রন্থ।  মধ্যকাল- এই সময়কে দুভাগে ভাগ করা যায়,পূর্বমধ্যকাল ও উত্তরমধ্যকাল।মার্গসঙ্গীত  সপ্তম শতাব্দীর মধ্যে লুপ্ত হয়।এরপর দেশী রাগের গ্রহ,অংশ,গ্যাস,উপন্যাস,অল্পত্ব,বহুত্ববাদী,ষাড়বত্ব,ঔড়বত্ব,মন্দ্র,মধ্য,তার ইত্যাদি লক্ষণগুলিকে যুক্ত করা হয়।এভাবে দেশী সঙ্গীত কুলীন হয়ে ওঠে।দেশী সঙ্গীতের অন্য ধারা লোকসঙ্গীত বা গ্রাম্যসঙ্গীত। পূর্বমধ্যকাল-এর সময় অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত।জয়দেব-এর "গীতগোবিন্দ"  ও শার্ঙ্গদেব-এর " সঙ্গীত রত্নাকর" গ্রন্থ থেকে জানা যায় যে এখন যেমন রাগ ও আলাপ গাওয়া হয় তেমন তখন প্রবন্ধ গাওয়া হত।খ্রিস্টীয় সপ্তম-অষ্টম শতকে দক্ষিণ ভারতে ভক্তি আন্দোলন হয়।এ সময় বিষ্ণু ও শিবের মহিমা প্রচার হত গানের মাধ্যমে।ত্রিবাঙ্কুরে(প্রাচীন চের র

Sangeet Shastra/Sangeet Byakaran

খ্রীষ্টপূর্ব শতাব্দীতে  ব্রহ্মা ভরত নামে এক সঙ্গীতশাস্ত্রীর রচনা থেকে,খ্রীষ্টীয় শতাব্দীর নাট্যশাস্ত্রকার ঋষি ভরত   উপাদান সংগ্রহ করে নিজের নাট্যশাস্ত্র রচনা করেন।এই ঋষি ভরত খ্রীষ্টীয় দ্বিতীয়-পঞ্চম শতাব্দীর মধ্যে আবির্ভূত হন বলে মনে করা হয়।তাঁর বইতে নাটক ছাড়াও সঙ্গীত সম্বন্ধেও আলোচনা আছে। গুপ্ত  সম্রাট সমুদ্রগুপ্তের মুদ্রায় তাঁর বীণাবাদনরত মূর্তি দেখা যায়।এ সময় যে সঙ্গীতচর্চা হত তা বোঝা যায়।এ যুগে ভারতীয় সঙ্গীতে শক্ জাতির প্রভাব পড়ে।শার্ঙ্গদেব তুরস্কতোড়ী,তুরস্কগৌড়,শক্ ইত্যাদি রাগের উল্লেখ করেছেন।এ যুগের কবি কালিদাস তাঁর "কুমারসম্ভব" কাব্যে কৈশিক রাগ,গীতমঙ্গল মঙ্গল প্রবন্ধ গীতির উল্লেখ করেছেন। "বিক্রমোর্বশী"  নাটকে ককুভ রাগ,জাম্ভালিকা,চর্চরী,দ্বিপদিকা প্রবন্ধগীতির উল্লেখ করেছেন। খ্রীষ্টীয় প্রথম বা দ্বিতীয় শতকে তামিল গ্রন্থ "পুরনানুরু" ও "পত্তু পত্তু" গ্রন্থে যুদ্ধের ঢাক,বিচারের ঢাক,যজ্ঞের ঢাকের উল্লেখ আছে। "তিবাকরম"( জৈন কোষগ্রন্থ ),"পারিপাডল"( তামিল গ্রন্থ )  গ্রন্থেগুলিতে যথাক্রমে আছে প্রাচীন দ্রাবিড় সঙ্গীতের পরিচয় এবং সাত স্

Sangeet Shastra/Sangeet Byakaran

সন্দিগ্ধকাল : এই কালের সময় খ্রীষ্টপূর্ব দশম শতাব্দী থেকে খ্রীষ্টীয় প্রথম শতাব্দী পর্যন্ত।এই সময় থেকে সঙ্গীত সম্বন্ধে বিস্তারিত জানার কোনো সুযোগ পাওয়া যায় না বলে একে সন্দিগ্ধকাল বলে।মনে করা হয় যে এ কালেই সাত স্বর ষড়জ থেকে নিষাদ পর্যন্ত নামকরণ হয়। রামায়ণ মহাভারতের কালকে গান্ধর্ব গানের স্বর্ণযুগ বলা হয়।বৈদিক পরবর্তী বৌদ্ধ যুগে ভারতে সঙ্গীতচর্চা ছিল।কৌটিল্যের "অর্থশাস্ত্র"  থেকে জানা যায় যে মৌর্যযুগেও সঙ্গীতচর্চা হত।বাৎসায়ন সঙ্গীতকে চৌষট্টি কলার প্রথমে স্থান দিয়েছেন। ভরতের কাল : এর সময় খ্রীষ্টীয় প্রথম শতাব্দী থেকে অষ্টম শতাব্দী অবধি।এ কালে গ্রাম,শ্রুতি,জাতি,মূর্চ্ছনা,স্বরের বিবরণ পাওয়া যায়।এ কাল সম্বন্ধে জানা যায় "ভরত নাট্যশাস্ত্র" ও  "নারদীয় শিক্ষা" থেকে।

Sangeet Shastra/Sangeet Byakaran

ভারতীয় সঙ্গীতের ইতিহাস

Sangeet Shastra/Sangeet Byakaran

আবির্ভাব-তিরোভাব : একটি রাগের কিছু স্বরসমষ্টি অন্য রাগে পাওয়া যায়।যথা-নি (খাদের)রে (কোমল)গ  ম (কড়ি)রে (কোমল)গ পুরিয়া ও পুরিয়াধানেশ্রী উভয়তেই আছে।এক্ষেত্রে বোঝা যায় না যে কোন রাগ গাওয়া হচ্ছে।কিন্তু গ ম (কড়ি)ধ  গ ম (কড়ি)গ যোগ হলে পুরিয়া স্পষ্ট প্রকাশ পায়।ঐ স্বরগুচ্ছ না প্রয়োগে পুরিয়াধানেশ্রী রাগের তিরোভাব এবং যোগে পুরিয়া রাগের আবির্ভাব।সমপ্রকৃতির রাগে এই প্রক্রিয়া ঘটে। প্রাচীনকালে সঙ্গীত শাস্ত্রে 'রাগ' শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায় না।মতঙ্গ ঋষির "বৃহদ্দেশী" গ্রন্থে প্রথম রাগের উল্লেখ পাওয়া যায়।আগে রাগ গাওয়া হতনা,জাতি গাওয়া হত।ভরতের নাট্যশাস্ত্রে সাতটি শুদ্ধ জাতি ও এগারোটি বিকৃত জাতির উল্লেখ আছে। সাতটি জাতি-ষাড়জী,আর্ষভী,গান্ধারী,মধ্যমা,পঞ্চমী,ধৈবতী,নৈষাদী।প্রথম চারটি ষড়জ গ্রাম জাত,বাকী তিনটি মধ্যমগ্রাম জাত।ষাড়জী থেকে পনেরোটি বিকৃত জাতি,বাকীগুলির প্রত্যেকটি থেকে তেইশটি করে শুদ্ধ বিকৃত জাতি উৎপন্ন হয়।

Sangeet Shastra/Sangeet Byakaran

রাগলক্ষণ- ভরতের নাট্যশাস্ত্রে দশটি বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ আছে, এর মধ্যে গ্রহ,অংশ,ন্যাস স্বর নিয়ে উল্লেখ আছে যা আগে পোস্ট করেছি,তাই পুনরাবৃত্তি করলাম না,বাকিগুলি নীচে দৃশ্য : অপন্যাস স্বর-রাগে যে স্বরগুলির উপর গায়ক বা বাদক কিছুসময় থামতে পারে।ন্যাস স্বরই আগেকার অপন্যাস স্বর। সংন্যাস স্বর-যে স্বরের উপর স্থায়ীর শেষ লাইন শেষ হয়। বিন্যাস স্বর-যে স্বরের উপর গানের চারটি ভাগের প্রথম লাইন শেষ হয়। বহুত্ব স্বর-কোনো স্বর বারবার ব্যবহার হলে তাকে বহুত্ব স্বর বলে।এটি দুই ভাগে বিভক্ত : যে স্বর আরোহ-অবরোহে বর্জন করা যায়না আবার ন্যাস করাও যায়না।বাদী-সমবাদী ছাড়া অনুবাদী স্বর বারবার প্রয়োগ হতে পারে।একে অলঙ্ঘনমূলক বহুত্ব বলে।যথা-ইমন রাগে 'ম'-র ব্যবহার।একে কখনই লঙ্ঘন করা যায়না,তা না হলে অন্য রাগের প্রভাব দেখা যেতে পারে।কিন্তু এই স্বরে এই রাগে ন্যাস ও করা যায়না। যে রাগে যে স্বর পুনঃপুনঃ প্রয়োগ হয়,তা অভ্যাসমূলক বহুত্ব স্বর।বাদী-সমবাদীকে এই স্বর আখ্যা দেওয়া হয়।যথা-বাগেশ্রী রাগে 'ধ'। অল্পত্ব-যে স্বর রাগে কম ব্যবহার হয়।আলাপ,বিস্তার করার সময় এটির প্রয়োগ বোঝা যায়।এই স্বর আরোহ-অবরোহে লঙ্ঘিত হয়।আশাবরী রাগ

Sangeet Shastra/Sangeet Byakaran

পরমেল প্রবেশক রাগ- মেল শব্দের অর্থ ঠাট।পরমেল হল পরবর্তী মেল বা ঠাট।অর্থাৎ পরমেল প্রবেশক রাগে আগের ও পরের ঠাটের,উভয়েরই  স্বর বজায় রাখা হয়। প্রাচীন ভারতে আর্য ঋষিগণ সাতটি স্বরের সঙ্গীতে প্রয়োগ রীতি নির্দিষ্ট করেন এবং সঙ্গীত পরিবেশনের রীতি,তাল,ছন্দ,লয় নির্ধারণ,সঙ্গীত রচনার রীতিও নির্দিষ্ট করেন।এক্ষেত্রে ভরত,মতঙ্গ,দত্তিল প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।এই রীতি অনুসরণ করেই ধ্রুপদ,ঠুংরী,খেয়াল গাওয়া হয়।একেই শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বলে। প্রাচীনকালে দুরকম গীত প্রচলিত ছিল :নিবদ্ধ গান বা তালবদ্ধ গান ও অনিবদ্ধ গান বা তালহীন গান। নিবদ্ধ গান তালের সঙ্গে গাওয়া হত।ধ্রুপদ,ধামার,খেয়াল,তারানা,টপ্পা ইত্যাদি নিবদ্ধ গান।নিবদ্ধ গানের পাঁচটি ভাগ ছিল-উদগ্রাহ,মেলাপক,ধ্রুব,অন্তরা,আভোগ।এগুলি এখনকার স্থায়ী,অন্তরা,সঞ্চারী,আভোগের পুরানো রূপ। অনিবদ্ধ গানের চার প্রকার : রাগালাপ-যে আলাপ দ্বারা রাগের দশ লক্ষণ অর্থাৎ গ্রহ,অংশ,ন্যাস,মন্দ্র,তার,অপন্যাস,অল্পত্ব,বহুত্ব,ষাড়বত্ব,ঔড়বত্ব প্রকাশ পায়। রূপকালাপ-এতে শুধু সুর থাকে,ভাষা ব্যবহার হয়না।একটি বিষয় কে অন্য একটি বিষয় হিসাবে বর্ণনা করলে তাকে রূপক বলে। আলপ্তি গান-এটি এক ধরনের আলাপ,যাতে রাগের সব ব