পোস্টগুলি

Sangeet Shastra/Sangeet Byakaran

কণ বা স্পর্শ স্বর- কণ শব্দের অর্থ স্পর্শ করা।কোনো স্বর উচ্চারণকালে আগের বা পরের স্বরকে অল্প স্পর্শ করে তবে তাকে স্পর্শ স্বর বলে।মূল স্বরের মাথায় একেবারে উপরে বা কোণ করে স্পর্শ স্বর লেখা হয়। মীড়- এক স্বর থেকে অপর স্বরে গড়িয়ে যাওয়া হল মীড়।এই বিষয়টিকে স্বরলিপিতে অর্ধবৃত্তাকার চিহ্ন বা ফার্স্ট ব্র্যাকেটের মত চিহ্ন দ্বারা বোঝানো হয়।ভাতখন্ডে স্বরলিপি পদ্ধতিতে অর্থাৎ হিন্দুস্থানী সঙ্গীত  পদ্ধতিতে স্বরের উপরে উল্টো নৌকার মত করে মীড় চিহ্ন বসে।আকারমাত্রিক পদ্ধতিতে স্বরের নীচে সোজা নৌকার মত করে মীড় বসে। সন্ধিপ্রকাশ রাগ- সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় যে যে রাগ গাওয়ার নিয়ম আছে তাদের সন্ধিপ্রকাশ রাগ বলে।প্রাতঃকালীন সন্ধিপ্রকাশ রাগ-ভৈরব,কালিংগড়া ইত্যাদি এবং সায়ংকালীন সন্ধিপ্রকাশ রাগ-পূর্বী,মারবা ইত্যাদি। গ্রাম- প্রাচীনকালে বাইশটি শ্রুতির ভিত্তিতে সাতটি শুদ্ধ স্বরকে স্থাপনা করা হলে,ঐ স্বরসমষ্টিকে গ্রাম বলে।অর্থাৎ সাতটি স্বরের সমাহার।সামবেদ থেকে স্বরের ও স্বর থেকে গ্রামের উৎপত্তি।তবে গ্রামের সংখ্যা নিয়ে পন্ডিতদের মধ্যে মতভেদ আছে। মূর্চ্ছনা- সাতটি স্বরের আরোহ অবরোহের ক্রম হল মূর্চ্ছনা।শুদ্ধ ও বিকৃত মিলিয়ে

Sangeet Shastra/Sangeet Byakaran

গ্রহ স্বর - যে স্বর থেকে রাগ গাওয়া শুরু হয় তা গ্রহ স্বর। অংশ স্বর- প্রাচীনকালে মনে করা হত,যে স্বর রাগে বেশি ব্যবহৃত হয় এবং অন্য সব স্বর যে স্বরের অধীন তাই অংশ স্বর। ন্যাস স্বর- যে স্বরে এসে রাগ শেষ করা হয়। বক্র স্বর- রাগে কিছু স্বর ক্রম অনুযায়ী  প্রয়োগ না হয়ে যখন আগে পরে করে ব্যবহৃত হয় তখন তা বক্র স্বর। বর্জিত স্বর- রাগে যে স্বরের ব্যবহার নিষিদ্ধ তাই বর্জিত স্বর।যথা-খাম্বাজ রাগে আরোহে 'রে' বর্জিত। স্থায়ী- এটি গানের প্রথম অংশ।এখান থেকে গান শুরু হয় ও গানের প্রতি অংশ গাওয়ার পর স্থায়ীতে ফিরতে হয়।এটি সাধারণত মন্দ্র ও মধ্য সপ্তকে গাওয়া হয়। অন্তরা- গানের দ্বিতীয় অংশ।এটি সাধারণত গাওয়া হয় মধ্য সপ্তকের গ ম প থেকে তার সপ্তকের র্গ র্ম র্প পর্যন্ত। সঞ্চারী- গানের তৃতীয় অংশ।এটিও মন্দ্র ও মধ্য সপ্তকে গাওয়া হয়।এই অংশের সঙ্গে স্থায়ীর কিছু সাদৃশ্য থাকে। আভোগ- গানের চতুর্থ অংশ।মধ্য সপ্তকের প থেকে তার সপ্তক অবধি এর বিস্তার।এই অংশের সঙ্গে অন্তরার অনেক সাদৃশ্য থাকে।

Sangeet Shastra/Sangeet Byakaran

  পূর্বাঙ্গ রাগ- রাগের বাদী স্বর সপ্তকের পূর্বাঙ্গে অর্থাৎ সা রে গ ম প-র মধ্যে থাকে এবং সেই রাগ দুপুর বারোটা থেকে রাত্রি বারোটার মধ্যে গাওয়া হলে তা পূর্বাঙ্গ রাগ। উত্তরাঙ্গ রাগ- রাগের বাদী স্বর সপ্তকের উত্তরাঙ্গে অর্থাৎ ম প ধ নি সা-র মধ্যে থাকে এবং সেই রাগ রাত বারোটা থেকে দুপুর বারোটার মধ্যে গাওয়া হলে তা উত্তরাঙ্গ রাগ। বাদী স্বর- রাগে যে স্বর বেশি ব্যবহৃত হয় তা বাদী স্বর।এটি রাগের প্রাণস্বরূপ।একে রাজা বলা হয়।যথা-কেদার রাগের বাদী স্বর 'ম'। সমবাদী- রাগে যে স্বর বাদী স্বরের থেকে কম,কিন্তু অন্য স্বরের চেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।এটি রাগের মন্ত্রীস্বরূপ।রাজ্যে যেমন রাজার পরেই মন্ত্রীর প্রাধান্য থাকে,ঠিক তেমন বাদী স্বরের পর সমবাদী স্বরের প্রাধান্য থাকে।যথা-কেদার রাগের সমবাদী স্বর 'সা' অনুবাদী- উপরের দুটি স্বর ছাড়া যে স্বরগুলি রাগ প্রকাশে সহায়ক তাই অনুবাদী স্বর।একে প্রজা বা সেবক মনে করা হয়। বিবাদী- এই শব্দের অর্থ শত্রু।রাগে যে স্বর প্রয়োগ হলে রাগভ্রষ্ট হয় তাই বিবাদী স্বর।তবে অনেকসময় রাগের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্যও বিবাদী স্বরের প্রয়োগ হয়।

Sangeet Shastra/Sangeet Byakaran

সপ্তকের পূর্বাঙ্গ-উত্তরাঙ্গ : একটি সপ্তকে সা রে গ ম পূর্ব ভাগ ও প ধ নি সা (সা-র মাথায় বিন্দু হবে)উত্তর ভাগ।যদি রাগের বাদী স্বর সপ্তকের পূর্ব ভাগে থাকে অর্থাৎ সা রে গ ম-র মধ্যে থাকে তবে তা সপ্তকের পূর্বাঙ্গ।আর যদি বাদী স্বর সপ্তকের উত্তর ভাগে থাকে অর্থাৎ প ধ নি সা-র মধ্যে থাকে তবে তা উত্তরাঙ্গ।

Sangeet Shastra/Sangeet Byakaran

রাগ-রাগিণী পদ্ধতি : প্রাচীনকালে প্রত্যেক রাগকে একই পরিবারের অন্তর্ভুক্ত মনে করা হত।প্রতি রাগিণীর পুত্ররাগ ও পুত্রবধূরাগ মিলিয়ে ছয়টি রাগকে মান্যতা দেওয়া হয়।মতান্তরে ছয় রাগের পাঁচ-পাঁচ বা ছয়-ছয় রাগিণী ও আট-আট পুত্ররাগ মানা হত।এই নিয়ম চারটি মতে মানা হত- সোমেশ্বর বা শিবমত :এই মতানুযায়ী ছয় রাগের প্রতিটির ছয়-ছয় রাগিণী ও আট পুত্ররাগ।যথা-ভৈরব,শ্রী,বসন্ত,পঞ্চম,মেঘ,নটনারায়ণ। কল্লিনাথ মত :ছয় রাগ,ছত্রিশ রাগিণী,আট পুত্ররাগ। ভরত মত :ছয় রাগ-ভৈরব,মালকোষ,হিন্দোল,শ্রী,দীপক,মেঘ।পাঁচ-পাঁচ রাগিণী,আট পুত্ররাগ ও পুত্রবধূ রাগ। হনুমত মত :ভরত মতানুযায়ী ছয় রাগ।তবে,রাগিণী,পুত্র ও পুত্রবধূ রাগের মধ্যে পার্থক্য ছিল।এই ছয়টি রাগ বিভিন্ন ঋতুতে গাওয়া হত।যেমন-গ্রীষ্মে দীপক,বর্ষায় মেঘ,শরতে ভৈরব,হেমন্তে মালকোষ,শীতে শ্রী,বসন্তে হিন্দোল। এই রাগ-রাগিণী পদ্ধতি 1100-1800 শতাব্দী অবধি বজায় ছিল।1813 খ্রিস্টাব্দে পটনায় মহম্মদ রজা খাঁ সর্বপ্রথম তাঁর" নগমাতে আসফী " গ্রন্থে ঐ পদ্ধতির অশুদ্ধতা প্রমাণ করেন।তিনি বিলাবল ঠাটকে শুদ্ধ ঠাট মেনে নতুন রাগ-রাগিণী পদ্ধতি তৈরী করেন।

Sangeet Shastra/Sangeet Byakaran

জন্য রাগ- জন্য অর্থে জাত বা যার জন্ম হয়েছে।ঠাট থেকে রাগের জন্ম হয়।তাই প্রত্যেক রাগই জন্য রাগ।যেমন-ভৈরব ঠাট থেকে ভৈরব রাগ,পূর্বী ঠাট থেকে পূর্বী রাগ,কাফী ঠাট থেকে বাগেশ্রী ইত্যাদি।   লক্ষণগীত- রাগের নাম,বাদী,সমবাদী,জাতি,সময়,আরোহ-অবরোহ প্রভৃতির উল্লেখ থাকলে তা লক্ষণগীত।এতে রাগের সম্পূর্ণ পরিচয় পাওয়া যায়। পকড়- রাগবাচক মুখ্য স্বরগুলিকে পকড় বলে।অল্প কিছু স্বরসমষ্টিকে পকড় বলে,যা দিয়ে রাগ চিনতে পারা যায়।যেমন-ভূপালী রাগের পকড় : সা গা রে,সা ধা,সা রে গা,পা গা,ধা পা গা,রে সা। ছায়ালগ ও সঙ্কীর্ণ রাগ- যে রাগ কোনো শুদ্ধ রাগের সামান্য ছায়া অবলম্বনে গাওয়া হয় তা ছায়ালগ বা সালঙ্ক রাগ।যথা-ছায়ানট রাগ। শুদ্ধ ও ছায়ালগ রাগের মিশ্রণে যে রাগ গাওয়া হয় তা সঙ্কীর্ণ রাগ।যথা-পিলু।দুই বা তার বেশি রাগের মিশ্রণ হল সঙ্কীর্ণ রাগ।

Sangeet Shastra/Sangeet Byakaran

আশ্রয়রাগ- হিন্দুস্থানী সঙ্গীতের প্রচলিত রাগগুলি কোনো না কোনো ঠাটের অন্তর্গত।প্রত্যেক ঠাটের এমন একটা করে রাগ আছে,যার নামে ঠাটের নামকরণ করা হয়েছে।সেই রাগগুলোই ঠাটগুলির আশ্রয়রাগ।যেমন আশাবরী ঠাট থেকে আশাবরী রাগের উৎপত্তি।তাই আশাবরী রাগ আশাবরী ঠাটের আশ্রয়রাগ।   জনকঠাট- যেসব ঠাট থেকে রাগের উৎপত্তি হয় তা হল জনকঠাট।হিন্দুস্থানী সঙ্গীতে প্রচলিত দশটি ঠাটই জনকঠাট। আরোহ- কিছু স্বরসমষ্টি নীচ থেকে যখন আরোহণক্রমে উপরে ওঠে তখন তাকে আরোহ বলে।যেমন-সা রে গা মা পা ধা নি র্সা। অবরোহ- কিছু স্বরসমষ্টি যখন অবরোহণক্রমে উপর থেকে নীচে নামে তখন তাকে অবরোহণ বলে।যেমন র্সা নি ধা পা মা গা রে সা। রাগের জাতি- রাগের আরোহ-অবরোহে সর্বদা সমান সংখ্যক স্বর ব্যবহত হয়না।পাঁচটি/ছয়টি/সাতটি স্বর ব্যবহৃত হয়।একে রাগের জাতি বলে।তিন জাতির রাগ হয় : সম্পূর্ণ -যে রাগের আরোহ-অবরোহে সাতটি করে স্বর ব্যবহার হয়।যেমন ভৈরবী রাগ।এটি হল সম্পূর্ণ-সম্পূর্ণ জাতি। ষাড়ব/খাড়ব-যে রাগের আরোহ-অবরোহে ছয়টি করে স্বর ব্যবহার হয়।যেমন মারবা।এটি ষাড়ব-ষাড়ব/খাড়ব-খাড়ব জাতি।'প' বাদ এই রাগে। ঔড়ব-এতে পাঁচটি করে স্বর ব্যবহার হয়।যেমন ভূপালী,'ম' ও 'ন